ইসলামী আইনের সমালোচনা -ইবনে ওয়ারাক ০১

The Totalitarian Nature of Islam
IBN WARRAQ

অনুবাদ: অগ্নি অধিরূঢ়

ইসলামী আইনের সমালোচনা

(১) হাদীসের কথা অনুযায়ী ইসলামের প্রধান দুই শিকড় হল কোরান এবং সুন্নাহ। প্রাথমিকভাবে কোরানের উৎস কেন বেহেশত নয়, তার কারণগুলো আমরা আলোচনা করেছি। এটা সপ্তম এবং নবম শতকের মাঝামাঝি সময়ে লিখিত। কোরান আসলে তালমুদীয় ইহুদীবাদ, প্রক্ষিপ্ত/ অপ্রামাণিক খ্রিস্টবাদ, স্যাম্যারিয়ার মতবাদ (Samaritans), জরথুস্ত্রের মতবাদ এবং প্রাক-ইসলামী আরবীয় রীতিনীতি থেকে প্রায় সম্পূর্ণটা ধার করা। এতে ঐতেহাসিক কালগত ভুল ও নানারকম বিভ্রান্তি, বৈজ্ঞানিক ত্রুটি, পরস্পরবিরোধীতা, ব্যকরণগত ভুল ইত্যাদি রয়েছে। দ্বিতীয়ত, এর তত্ত্বগত শিক্ষা তার নিজের মধ্যেই অনেক অসংলগ্ন অপ্রাসঙ্গিক ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্যকে ধারণ করে। কোন করুণাময় ঈশ্বরের মহত্ব এর মধ্যে নেই। অবশ্য কোথাও কি কোনরকম ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে। অবশ্য কোরাণেরও কিছু প্রশংসনীয় দিক আছে। যেমন: উদারতার প্রয়োজন স্বীকার, বাবা-মাকে শ্রদ্ধা এবং এ ধরণের আরও কিছু ভাল কথা কোরানে আছে। কিন্তু এগুলো মূল নৈতিক তত্ত্ব নয়। আর এগুলো ছাপিয়ে মূল্যহীন নীতিগুলো কোরানে বড় হয়ে উঠেছে। যেমন: প্যাগানদের মত সহনশীলতার অভাব, সন্ত্রাস ও রক্তপাতের তথা খুন-খারাবির আহ্বান, নারী ও নামুসলিমদের জন্য সমানাধিকারের অভাব, দাসপ্রথাকে স্বীকার, হিংস্র উপায়ে শাস্তি এবং মানবিক কারণসমূহকে অবজ্ঞা ইত্যাদি।

(২) Goldziher, Schacht, এবং অন্যান্যরা স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন যে, অধিকাংশ, আসলে বেশিরভাগ হাদীস নবীর পরবর্তী কয়েক শতাব্দীব্যাপী ব্যাপক মিথ্যাচারের মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এই ঘটনাকে স্বীকার করলে দেখা যায় যে ইসলাম খুব নড়বড়ে ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। সম্পূর্ণ ইসলামী আইন আসলে ব্যাপক প্রতারণাপূর্ণ, কল্পনা ও অলীক ধর্মীয় কাহিনী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

যখন থেকে ইসলামী আইনকে দেখা হয়েছে এভাবে- ইসলামী চিন্তাকে সংক্ষেপে বলা যায় এক আদর্শ ইসলামী পদ্ধতির জীবন ব্যবস্থা আর এটাই ইসলামের মর্মস্থলের অন্তঃসার। অনেকের এই উপলব্ধি বিষয়ে Goldziher এবং Schacht এর উপসংহার হল -" খুব বেশি হলে বলা যায় - ধ্বংসাত্মক"।

(৩) মোল্লার শক্তি

মোল্লার শক্তি বলতে আল্লার ইচ্ছাকে বুঝতে হবে। তা সে একবার বা বহুবার যখনই প্রকাশিত হোক না কেন, মানুষ কি করবে কিংবা করবে না, মানুষের মূল্যবোধ একক অথবা সমস্টিগতভাবে আল্লাহর ইচ্ছা কত বেশি বা কত অল্প মেনে চলছে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণকে বোঝাবে। এটা হল মানুষের যে জীবনযাত্রা তার প্রতি আল্লাহর প্রস্তাবনা। স্বতন্ত্রভাবে বললে মোল্লার শক্তি হল এক ধরণের আইনী উপাদান, যার মাধ্যমে বাধ্যতার মাত্রা অনুসারে শাস্তি অথবা পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে। আর একটু এগিয়ে গেলে দেখা যাবে: " আল্লাহর ইচ্ছা" (মোল্লার শক্তিকে সংরক্ষণ করার অধিকার সমূহ) বলতে বুঝতে হবে যে, শেষ পর্যন্ত এটা শুধুমাত্র বেহেশতীয় আদেশ। সোজা ভাষায় বললে: এটা হল এক বিরাট ভাষাগত চাতুর্য। এক "পবিত্র ধর্মগ্রন্থ" আবিষ্কৃত হয়েছে, এটা জনগণের সামনে সম্পূর্ণ গালভারা ও বাগাড়ম্বর বুলি দিয়ে ধর্মীয় মোড়কে জড়িয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। এটা পুথিগত বিদ্যা জর্জরিত এক কঠোর পণ্ডিতিমাত্র। ধর্মনেতারা যে সব অধিকারের উপর নিজের সর্ব নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চান, (অর্থাৎ এটাই আল্লাহর ইচ্ছা) সেই সব উপাদানকে মিশিয়ে সকলের জন্য মাত্র একবারই তৈরি করেছেন। এই ঘোষণা জনসাধারণের মধ্যে প্রচার হওয়ার সাথে সাথে মানুষের জীবনকে এক নির্দিষ্ট ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে মোল্লাদের প্রয়োজনীয়তা হয়ে পড়েছে অতিআবশ্যিক ও অপরিহার্য।


অসমাপ্ত

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post