এটা অসম্ভব নয় যে বিশ্বাসের ফেরীওয়ালারা তাদের সেবার বিষয়কে বিশেষ ঘটনা হিসেবে মূল্যায়ন করে থাকে। তাদের নিজেদের আত্মার কষ্টকর অভিজ্ঞতা থেকেই তারা মানুষকে 'বিষয়' করে তোলে। তাই মনে হয় মাদার তেরেসা ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি তার দৃঢ় বিশ্বাস যত হারাবেন, ততই তিনি দরিদ্রতমদেরকে তার অবলম্বন ও দয়ার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিবাহ বিচ্ছেদ, গর্ভপাত এবং জন্মবিরতিকরণ ওষুধের বিরুদ্ধে লোক দেখানো লড়াই চালিয়ে চাতুর্যের সাথে নিজের সন্দেহকে আড়াল করবেন। আর এসব কি তার কীর্তিগুলোর মর্যাদা কমিয়ে দেয় না? তার জন্য একজন সহায়হীন ভিখিরি ঠিক তাই- এই সহায়হীনতা খুব সহজে তার (মাদার তেরেসার) প্রচারণাকে সক্রিয় রেখেছে। তার দেয়া কথা অনুযায়ী ভুখা বাঙালিকে খাদ্য যোগান দেয়ার বিষয়টি এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু দাতব্য কার্যাবলীর নামে সংগৃহীত টাকার বেশিরভাগ পবিত্র উদ্দেশ্যে তৈরি করা কনভেন্ট এর দালান তৈরিতে ব্যয় করা হয়েছে। এ কাজে মাদার তেরেসা আনন্দের সাথেই সম্মতি দিতেন। আর এসব তার নিজস্ব উদ্দেশ্য ও ক্যাথলিক মতবাদ বিষয়ে তার নিজস্ব শিক্ষাকেই প্রতিষ্ঠিত করত। এই জাতীয় ধর্মীয় নেতাগিরি দরিদ্রতার কোন নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে; নারীরা সন্তান জন্মদানের যন্ত্র- এই অবস্থা ও মর্যাদার কোনরূপ পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি।
যখন দায়িত্বহীন, ভণ্ডামীপূর্ণ এবং দূর্নীতিগ্রস্থ- শুধুমাত্র তখনই যে বিশ্বাস শব্দটি বিষাক্ত এবং বিপদজনক তা নয়; যখন এটা নিখাদ বিশ্বাস তখনও। বলা যায় যে, 'বিশ্বাসের নিশ্চয়তা' ও 'বিশ্বাসের অধিকার' বিষয়গুলো শুধুমাত্র চার্চের শক্তি বৃদ্ধিতে নয় (যে কাজটি মাদার তেরেসা সবসময় করতেন) ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিদেরকে প্রভাবিত করতেও ব্যবহার করা হয়। অসংখ্য প্রমাণসাপেক্ষে আমরা জানি যে তিনি এবং তার অনুসারীরা কিভাবে এই বৃত্তটি তৈরি করেছিলেন।
তোমার আশঙ্কাকে দমন কর, হতাশা থেকে মুক্ত হও, তোমার উৎসাহকে পুনর্গঠন কর, আমরা তোমাকে সন্ন্যাসী বানিয়ে দেব এবং পরে তুমি তোমার মৃত্যুর পরেও রোগাক্রান্তকে সুস্থ করে তুলতে পারবে। এটা এই পয়েন্টে ঠিক সেটাই যে, তাদের পলায়নবৃত্তি একটি হাস্যকর চক্রকে সম্পূর্ণ করে তোলে এবং বলা হয় যে, যতদিন এই রহস্যজাল অটুট থাকবে ততদিন তুমি যা খুশি তাই করার অনুমতি পাবে।
আবার বলি, যিনি ধর্মযাজকদের সামনে একজন রিক্রুটিং সার্জেন্ট এর মতো দৃঢ়তার সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতেন, সেই অভাগা বৃদ্ধা মহিলা তার নিজস্ব বিশ্বাসকে অতিব্যবহারে নিঃশেষ করে ফেলেছেন।
সমাপ্ত
Post a Comment