আল্লাহ'র আত্মপ্রেমী বোকা মন ০২

আবুল কাশেম
অনুবাদ: অগ্নি অধিরূঢ়

পূর্ব প্রকাশের পর

পাঠকগণ নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে, আল্লাহ মোহাম্মদকে পড়ার জন্য বলেননি। আরবী শব্দ কুল (পড়) কোথাও নেই। তাই, আমরা বলতে পারি উপরের বাক্যগুলো আসলে মোহাম্মদ বা অন্য কেউ বলেছে।
আমরা যদি বিশ্বাস করি যে কোরানের লেখক একমাত্র আল্লাহ, তাহলে বলতে হবে আল্লাহর বোকামীর কোন সীমারেখা নাই।

* আল্লাহ নিজে বলেছেন "ইনশাল্লাহ" অর্থাৎ 'যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন'।
সুরা কাহফে আল্লাহ মোহাম্মদকে অচেতন জাতি সম্পর্কে বলেছেন। এর পূর্বে মোহাম্মদ কোন ধর্মীয় কাহিনী জানেন কিনা সে সম্পর্কে ইহুদিরা খোঁজখবর নিয়েছিল। ইহুদিদের বক্তব্য শুনে মোহাম্মদ হতভশ্ব হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি উত্তর দেবার জন্য দুই (২) সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। আল্লাহ এ বিষয়ে সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখাবেন সেটাই তার প্রত্যাশা ছিল। দুই সপ্তাহ চলে গেল। মোহাম্মদ তারপরও কিছু বললেন না। ইহুদি পুরোহিতরা আল্লাহর বুদ্ধির শক্তি বুঝে গেলেন। এই আচরণের ব্যাখ্যা দেয়ার কাহিনী সুরা কাহফ ১৮.২৩-২৪ তে লেখা আছে এভাবে-
মোহাম্মদ আল্লাহকে তার (আল্লাহর) দেরির বিষয়ে অভিযোগ জানালেন। আল্লাহ মোহাম্মদকে মৃদু ভৎর্সনা করে ইহুদী ধর্মযাজকদের সাথে কথা বলার সময় 'ইনশাল্লাহ' শব্দটি ব্যবহার করতে বললেন।
সুরাগুলো এরকম (অনু: হিলালি এবং খান)
  • ১৮.২৩ - এবং কখনো বলবে না 'আমি আগামীকালকে এই এই করবো'।
  • ১৮.২৪ - 'যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন'- এটা বলা বাদ দিয়ে.... ভুলে গেলে তোমার আল্লাহকে স্মরণ করবে এবং বলবে 'হয়তো আল্লাহ আমাকে অপেক্ষাকৃত আরো সত্যের কাছাকাছি নিয়ে যাবে'।
সুরা আল-কালামে (সুরা ৬৮) আল্লাহ এক বাগানের গল্প করেছেন। বাগানের মালিকপক্ষ উচ্চ ফলন হবার অহঙ্কারে ফল তোলার সময় 'ইনশাল্লাহ' বলতে ভুলে গিয়েছিল। পরের দিন তারা বাগানে গিয়ে দেখে সব ধ্বংস হয়ে গেছে।

লাইনগুলো এরকম-
৬৮.১৭ - আমরা কমবেশি চেষ্টা করেছিলাম, আমাদের আগ্রহের কমতি ছিল না। পরদিন যখন তারা ফল তুলতে বাগানে গেল তখন।
৬৮.১৮ - ইনশাল্লাহ (আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন) না বলাতে।
৬৮.১৯ - বাগানে ঢুকেই তারা দেখল তাদের আল্লাহ গতরাতে সবাই ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে বাগানে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ফলে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
৬৮.২০ - ফলে সকালে সমস্ত বাগানটাকে কালো দেখাচ্ছিল। পিচকালো রাত্রির মতো (সবকিছু পুড়ে নষ্ট হবার পর)

অবাক কাণ্ড হল নিচের সুরাতে (অনু: হিলালি এবং খান) আল্লাহ নিজে 'ইনশাল্লাহ' বলেছেন।
৪৮.২৭ - আল্লাহ অবশ্যই আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে স্বচ্ছ করবেন, আমাদেরকে সত্যের সন্ধান দিবেন। যেরকম বাস্তব দৃশ্য মোহাম্মদকে দেখিয়েছেন। (এর মানে হল- মোহাম্মদ একটা স্বপ্ন দেখেছেন, তিনি সঙ্গিসাথীদেরকে নিয়ে মক্কায় ঢুকেছেন। সাথীদের কারো চুল ছোট করে কাটা, কেউ কেউ ন্যাড়া মাথা।) অবশ্যই তুমি আল মসজিদদালহারাম এ নিরাপদে প্রবেশ করতে পারবেন। তোমার সাথীদের কেউ চুল ন্যাড়া করবে, কেউ কেউ চুল ছোট করে কাটবে। কোন ভয় পাবে না। তুমি (মোহাম্মদ) জাননা তা তিনি (আল্লাহ) জানেন। তিনি তোমাকে বিজয়ের খুব কাছাকাছি এনেছেন।

উপরোক্ত লাইনগুলোতে আল্লাহ স্পষ্টভাবে 'ইনশাল্লাহ' শব্দটি উচ্চারণ করেছেন। আরবী কোরানে ৪৮.২৭ নম্বর সুরাটি দেখুন-
Laqad sadaqa Allahu rasoolahu alrru/ya bialhaqqi latadkhulunna almasjida alharama in shaa Allahu amineena muhalliqeena ruoosakum wamuqassireena la takhafoona faAAalima ma lam taAAlamoo fajaAAala min dooni thalika fathan qareeban. (Note: thebold emphasis is mine)

আল্লাহর এই শিশুতোষ বোকামীকে ঢাকার জন্য সুরার নিচে মওদুদী মন্তব্য করেছেন-এখানে ইনশাল্লাহ (যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন) শব্দটি সম্পর্কে, যা আল্লাহ তার নিজের প্রতিজ্ঞার সাথে উচ্চারণ করেছেন। যা বলতে চাই, তা হল নিজের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে ঘটনাকে অসম্ভাব্য করে তোলার কারণ কি? উত্তর হল: এখানে 'ইনশাল্লাহ' শব্দটি 'আল্লাহ ইচ্ছা করবেন না' এরকম বোঝায় না। তিনি তার প্রতিজ্ঞানে অপূর্ণ রাখবেন না। কিন্তু যে পরিস্থিতিতে তিনি এই কথা বলেছেন তা হল........
(মন্তব্য নং; ৪৮/৪৮ http://www.tafheem.net/main.html)
মওদুদীর মন্তব্য নিয়ে আমি কোন টস করবো না। হয়তো আল্লাহ নিজেও হ্যাঁ অথবা না এ দুয়ের মধ্যে কোনটাকে বেছে নিবেন তা বোঝেননি।

সমাপ্ত

5/Post a Comment/Comments

  1. বা! এমন ব্লগই এতদিন খুঁজছিলাম। বারবার পড়ার মত লেখাগুলোর জন্য অগ্নি অধিরূঢ়কে ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ, অনেক কিছু জানলাম।

    ReplyDelete
  3. আপনাকেও ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  4. অগ্নিভাই এগিয়ে চলুন,
    আমরা আছি তোমার সাথে।

    ReplyDelete
  5. U just simply deserve a WHOA.
    Wishing all the best....

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post