আপনারা জানেন আসলে কোন ঈশ্বর নেই
There is No God (And You Know It)
মূল: স্যাম হ্যারিস (Sam Harris)
অনুবাদ: অগ্নি অধিরূঢ়
There is No God (And You Know It)
মূল: স্যাম হ্যারিস (Sam Harris)
অনুবাদ: অগ্নি অধিরূঢ়
পৃথিবীর কোন একজন মানুষ একটি ছোট মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেল। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েটিকে ধর্ষণ ও নির্যাতন শেষে খুন করা হবে। এই ধরণের নৃশংস ঘটনা যদি ঠিক এই মুহূর্তে নাও ঘটে, তাহলেও এটা ঘটবে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে অথবা খুব বেশি হলে এক দিন লাগতে পারে। পরিসংখ্যানের নিয়ম অনুযায়ী এ ধরণের নিশ্চিত বর্ণনা দেয়া সম্ভব। পৃথিবীর ছয় মিলিয়ন মানুষের জীবনে কি ঘটে তাও বলা সম্ভব এই পরিসংখ্যানের সূত্র থেকে। এই পরিসংখ্যান আমাদেরকে বলছে যে ঠিক এই মুহূর্তে মেয়েটির বাবামা বিশ্বাস করছে - সর্বশক্তিমান ও প্রেমময় ঈশ্বর তাদেরকে ও তাদের পরিবারের সবকিছু দেখছেন। এ ধরণের বিশ্বাস রাখা কি সঠিক? তারা যে এরকম বিশ্বাস করছে, তা কি ভাল?
এর প্রতিক্রিয়ার প্রতি সংযম প্রদর্শনই নাস্তিকতার প্রধান আচরণ। নাস্তিকতা কোন দর্শন নয়। এমনকি পৃথিবীর নিজস্ব কোন দৃষ্টিভঙ্গীও নয়। এটা আসলে সোজা পথকে অস্বীকার করার প্রবণতাকে প্রত্যাখ্যান করে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে 'স্পষ্টতা'কে নীতিবাদের দোহাই দিয়ে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অথচ 'স্পষ্টতাকে' পর্যবেক্ষণ করা উচিত। আলোচনায় বিশ্লেষণ করার জন্য 'স্পষ্টতাকে' বারবার পরীক্ষা করা উচিত। এটা প্রশংসাহীন কাজের মত। এর জন্য কেউ ধন্যবাদ দিবে না। বিরক্তি ও সংবেদনহীনতার এক বলয় একে সবসময় ঘিরে রাখে। এটা আসলে, বস্তুত: নাস্তিকরা এ ধরণের ধৈর্যশীল হতে চায় না।
বলা বাহুল্য, কেউ নিজেকে জোতিষশাস্ত্র বা মধ্যযুগীয় রসায়নবিদদেরকে অবিশ্বাসী হিসেবে ভাবার প্রয়োজন বোধ করে নি। ফলস্বরূপ, এইসব অপধারণার বৈধতাকে যারা উপেক্ষা করে সেই মানুষদের জন্য আমরা কোন শব্দ ব্যয় করতে চাই না। একইভাবে নাস্তিকতা এমন একটি ধারণা যার কোন অস্তিত্ব নেই।
নাস্তিকতা আসলে খুব বড় কিছু না। তথাকথিত ধর্মীয় বাতাবরণে বাসকালীন সময়ে মানবিক ও বিবেকবান মানুষেরা যেসব শব্দাবলি ইচ্চারণ করেন, নাস্তিকতা তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। একজন নাস্তিক ব্যক্তি খুব মহা কিছু নন। তিনি শুধু এটুকু বিশ্বাস করেন যে, আমেরিকার যে ২৬০ মিলিয়ন জনগণ (মোট সংখ্যার ৮৭%) বলে -"কখনও ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাস করিনি", তাদেরকে এর বাস্তবতার স্বপক্ষে প্রমাণ দেখাতে হবে। আর হ্যাঁ, অবশ্য তার সহানুভূতিপ্রবণ মন এই পৃথিবীতে প্রতিদিন আমরা মানবতার যে ভয়াবহ অপমান দেখি, তাকে প্রত্যাখ্যান করে।
আমাদের অবস্থা যে কতোটা অলৌকিকঘেঁষা, রহস্যময় একথা শুধু নাস্তিকরা স্বীকার করে। আমাদের বেশিরভাগ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে। এই ঈশ্বরের সাথে অলিম্পাস পর্বতের ঈশ্বরের মূলগত কোন প্রভেদ নেই। পুরুষ বা মহিলা, যতটুকু যোগ্যতা থাক না কেন, এমন কেউ নেই যিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক অফিসগুলোতে গিয়ে ঈশ্বরের অস্তিত্বে নিশ্চিত করার ছলনা খুঁজে পাবেন না। মধ্যযুগে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী আমাদের দেশের জননীতিগুলো ধর্মীয় প্রথা ও সংস্কারগুলোকে উৎসাহিত করে। আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা দুর্দশাগ্রস্থ, অমার্জনীয় এবং আতঙ্ককর। এই উদ্বেগ যদি আর না বাড়তো তাহলে তা খুব আনন্দের হত।
সম্প্রতি নিউ অরলিন্সকে ধ্বংস করে দেয়া হারিকেন ক্যাটরিনা'র বিষয়টা বিবেচনা করুন। প্রায় ১ হাজার মানুষ মারা গেছে, ১০ হাজার জনের স্থাবর সম্পত্তি নষ্ট হয়ে গেছে এবং ১ মিলিয়নের বেশি মানুষ তাদের ঘরহারা হয়েছে। নিশ্চিত করে এটা বলা যায় যে, যে মুহূর্তে ক্যাটরিনা আঘাত হানছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে নিউ অরলিন্সের বেশিরভাগ মানুষ এক সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ ও করুণাময় ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিল। কিন্তু যখন ক্যাটরিনা তাদের শহরকে বিধ্বস্ত করছিল, তখন ঈশ্বর কি করছিলেন? জলোচ্ছ্বাসে ডুবন্ত অবস্থাতেও বাড়ির চিলেকোঠা রক্ষার জন্য বয়স্ক ও মহিলাদের প্রার্থনা তিনি অবশ্যই শুনেছেন। কিন্তু তিনি কিছুই করেন নি। ওদের সকলের সলিলসমাধি ঘটেছে। এই মানুষেরা সবাই বিশ্বাসী ছিল। জীবনের জন্য যারা প্রার্থনা করেছিল, তারা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই ভাল মানুষ ছিলেন।
সরলতাকে গ্রহণ করার মত সৎসাহস একমাত্র নাস্তিকেরই আছে। এই হতভাগা লোকগুলো এক কল্পিত বন্ধুর সান্নিধ্যেই জীবন কাটিয়ে দিল। হ্যাঁ, বাইবেলে উল্লেখ আছে এমন একটি ঝড় নিউ অরলিন্সে আঘাত হানবে- এরকম একটি সতর্কবার্তা ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু আসন্ন ঝড়ের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল একেবারেই দুর্বল। আমরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে একে দুর্বলতা বলছি। নির্বাক প্রকৃতির কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেয়ার মত করে আবহাওয়াবিদগণ বিভিন্ন উপাত্ত ও উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত ছবির মাধমে ক্যাটরিনার যাত্রাপথ আগেভাগেই জেনেছেন। ঈশ্বর তার পরিকল্পনার কথা কাউকে বলেনি।
নিউ অরলিন্সের বাসিন্দারা কি ঈশ্বরের বদান্যতার উপর ভরসা রেখে নিশ্চিন্ত ছিল? মুখের উপর দমকা বাতাস আঘাত হানার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা হয়ত জানত না যে এক হিংস্র হারিকেন তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে যাচ্ছে। এখনও ওয়াশিংটন পোস্ট কর্তৃক পরিচালিত এক জরীপে দেখা গেছে ক্যাটরিনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়াদের ৮০% মনে করে এই ঘটনা ঈশ্বরের উপর তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ় করেছে।
চলবে
মিয়া তুমি একটু বেশি বোঝ
ReplyDeleteচলুক!
ReplyDeleteএইসব ভুয়া কথার কোন খাওয়া নাই।
ReplyDeleteনা চলবে না।
ReplyDeleteপ্রিয় বিশেষ Anonymous(অনামিকা),
ReplyDeleteযেদিন তুমি জন্মেছিলে সেদিন কি এক মানবশিশু জন্মেছিল? নাকি এক ধর্ম জন্মেছিল? তোমার মা, তোমার বাবা কি একটা ধর্মকে কোলে নিয়েছিল? নাকি একটা শিশুকে কোলে নিয়ে হেসেছিল? যখন তোমার অসুখ হয় তখন তাঁরা অস্থির হন তোমার জন্য নাকি ধর্মের জন্য? আবার একদিন যখন তুমি সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে দূরে তখন পরম মমতায় তাঁরা কি ধর্মকে কবর দিবে? তাঁরা কি তোমার স্মৃতি খুঁজে-ফিরে কষ্ট পাবে নাকি ধর্মশোকে মুহ্যমান থাকবে?
এবার, ধরলাম তুমি মুসলমান। জন্মসূত্রে খাঁটি মুসলমান। তোমার কাছে তোমার ধর্ম সেরা। তোমার নবী মহা নবী। আর হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম তোমার কাছে হাস্যকর, হারাম।
এবার ধরলাম, তুমি জন্মসূত্রে হিন্দু। সারা জীবন মা কালীকে পুজো দিয়ে এসেছ। আর ইসলাম ধর্ম অচ্ছুত। রাম রাম!
এবার তুমি বৌদ্ধ। বুদ্ধং সরনং গচ্ছামি, ধর্মং সরনং গচ্ছামি, সঙ্ঘং সরনং গচ্ছামি। তোমার ধর্ম তোমার কাছে শ্রেষ্ঠ। ভগবান বুদ্ধ তোমার কাছে মহান। আর সব ধর্ম মিথ্যা, ভন্ড।
এখন বল, কার ধর্ম সত্য? কার ঈশ্বর সত্য? তোমারটা?
হ্যাঁ, সত্য আছে। সব ঈশ্বর কাল্পনিক, এ-সত্যবোধ আমাদের আছে।
আরিফুর এবং রাশেদ আপনাদেরকে ধন্যবাদ। আর যারা নামহীন তাদের জন্য করুণা ছাড়া আমার কাছে আর কিছু নেই। তারা যে নাম প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছে এ থেকেও তাদের মনোভঙ্গি বোঝা যায়।
ReplyDeletePost a Comment