বিশ্বাস করার স্বপক্ষে কিছু ভাল ও মন্দ কারণ ৪

ধরো, তোমাকে বললাম যে তোমার প্রিয় কুকুরটা মারা গেছেতাহলে প্রথমে তোমার মন খুব খারাপ হয়ে যাবেহয়তো তুমি জিজ্ঞাসা করবে তুমি কি নিশ্চিত? কিভাবে তুমি জানলে? কিভাবে এটা ঘটল?’ এখন ধরি, আমি বললাম -আমি আসলে ঠিক জানিনা যে কুকুরটা মরেছেএর কোন প্রমাণ আমার কাছে নেইআমার মনের ভিতরে একটা অনুভূতির সৃষ্টি হল যে হয়তো সে মারা গেছেতাহলে ভয় দেখানোর জন্য তুমি আমার উপর কিঞ্চিৎ রেগে যাবেকারণ তুমি জানো কারো মনের অনুভূতি কেউ মারা যাবার ঘটনা বিশ্বাস করার মত যথেষ্ঠ জোলালো ও গ্রহণযোগ্য নয়এজন্য তোমার সঠিক তথ্য প্রমাণ দরকারআমাদের প্রত্যেকেই সময়ে সময়ে মনের গভীরে বিভিন্নরকম অনুভূতি বোধ করিকখনও সেগুলো সঠিক হয় কখনওবা হয় নাবিভিন্নরকম মানুষ প্রত্যেকের চাইতে ভিন্নরকম অনুভূতি বোধ করেতাহলে কেমন করে তুমি কার অনুভূতিকে সত্য বলে গ্রহণ করবে? তাহলে কুকুরের মারা যাবার ঘটনা আমরা কিভাবে বিশ্বাস করতে পারি? যে নিজচোখে মৃত দেখেছে তার কাছ থেকে শুনে অথবা নিজে কুকুরের হৃদপিণ্ডের বন্ধ হওয়া পরীক্ষা করে কিংবা যিনি কুকুরটা মারা যাবার সময় উপস্থিত ছিলেন এমন কারো কাছ থেকে জেনে নিয়ে

মানুষ কখনও কখনও বলে যে নিজের মনের গভীর অনুভবকে বিশ্বাস করতে হবেনা হলে স্ত্রীর ভালোবাসার উপর আস্থা রাখা সম্ভব হবে নাকিন্তু এটা ভুল যুক্তিকারণ কেউ কাউকে ভালোবাসে কি না তা বোঝার অনেক উপায় আছেচোখে দেখে ও কানে শুনেও ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়ধর্মীয় নেতারা যেমন বলেন তেমন এটা শুধুমাত্র মনে গভীরে অনুভবের বিষয় নয়বাহ্যিক বেশ কিছু চিহ্ন দেখে মনের অনুভূতি বোঝা যায়চোখের চাহনী, কথার কোমলতা, সহানুভূতি, সহৃদয়তা, এগুলো সবই সত্যিকারের প্রমাণ

কখনও কখনও মানুষ কোন প্রমাণ ছাড়াই মনে করে তাকে অন্য কেউ ভালোবাসেশেষ পর্যন্ত যদিও তা মিথ্যায় পর্যবসিত হয়, তবুও তারা নিজেদের বিশ্বাসে অটল থাকেকেউ কেউ মনে করে যে সিনেমার নায়ক (বা নায়িকা = Actor) তাকে ভালোবাসেযদিও তাদের কখনও দেখা হয়নিতবুও এমন বিশ্বাস থেকে তাকে টলানো যায় নাএই ধরণের মানুষেরা আসলে মানসিকভাবে অসুস্থঅন্তর্গত অনুভূতিকে বাইরের কিছু উপাদানের প্রেক্ষিতে প্রমাণ সাপেক্ষ হতে হবে, না হলে তাকে কোনক্রমেই বিশ্বাস করা যাবে না

মনের গভীরের অনুভূতি বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রেও খুব প্রয়োজনকিন্তু এটা শুধুমাত্র পরবর্তীতে প্রমাণের জন্য পরীক্ষণযোগ্য তবে এমন সব আইডিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্যকোন একটা ধারণা যখন খুব সত্যি বলে মনে হয়, তখন বিজ্ঞানীরাও সে সম্পর্কে দৃঢ় ধারণা পোষন করেনকিন্তু এটা তারা দীর্ঘসময়ব্যাপী পরীক্ষা চালানোর সুবিধার জন্য করে থাকেনতারা ঐ দৃঢ় ধারণাকে ভিত্তি করে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে একটি যথার্থ প্রমাণ খোঁজার চেষ্টা করেনবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন আইডিয়া খুঁজে পাবার জন্য নিজের মনের অনুভূতিকে ব্যবহার করেনকিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত কোন প্রমাণ খুঁজে পান না ততক্ষণ নিজের মনের ভাবনার জন্য কোন দায়বদ্ধতা স্বীকার করেন না
(চলবে)

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post