ধরুন রাস্তায় আপনি একটি মেয়ে দেখলেন। অপরূপ সুন্দরী, পূর্ণযৌবনবতী, সেক্সি। মেয়েটিকে দেখে আপনি দারুণভাবে কামোত্তেজিত হয়ে পড়লেন। কী করবেন আপনি? এই অবস্থায় ইসলামী সমাধান- চটপট ঘরে ফিরে গিয়ে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করুন। বর্তমান যুগে রাস্তাঘাট-অফিস আদালত সর্বত্র পর্ণগ্রাফি তথা কামোত্তেজক জিনিসের ছড়াছড়ি। ম্যাগাজিনের শোভন মলাটে নগ্ন নারীমুর্তি দেখে কতবার যে আপনাকে ঘরে দৌড়াতে হয়- কে জানে ? এ প্রসঙ্গে যে হাদিসটি আছে তার বিবরণঃ সহি মুসলিমঃ বুক নং-৮, হাদিস নং-৩২৪০: জাবির হতে বর্ণিতঃ আল্লাহর রাসুল (দঃ) একবার একজন স্ত্রীলোক দেখতে পেলেন। সুতরাং তিনি তাড়াতাড়ি তার স্ত্রী জয়নবের নিকট গেলেন এবং তার সাথে সঙ্গমে মিলিত হলেন। জয়নব তখন একটি চামড়া ট্যান করছিলেন। সঙ্গম শেষে রাসুল সাহাবীদের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন- সাক্ষাৎ শয়তান মেয়ের রূপ ধরে আমার কাছে আসল। সুতরাং তোমরা কেউ যদি এরূপ মেয়ের মুখোমুখী হও, তৎক্ষনাৎ নিজের স্ত্রীর নিকট চলে যাবে। এভাবেই কেবল অন্তরের কু-বাসনার নিবৃত্তি সম্ভব।
ফরজ গোসলঃ
যদি কোন ব্যক্তি যৌন বিষয়ক চিন্তার প্রকোপে অত্যাধিক কামোত্তেজিত হয়ে পড়ে - তাকে ফরজ গোসল করে পাক-পবিত্র হতে হবে (যৌন সঙ্গমের পর বাধ্যতামুলকভাবে সর্বাঙ্গ ধৌত করার ইসলামী নাম ফরজ গোসল)। একবার ভাবুন, এই নিয়ম ফলো করতে হলে দিনে কতবার আপনাকে ঘরে দৌড়াতে হবে এবং স্ত্রীর যৌনাঙ্গর সাথে আপনার খৎনা করা প্রতঙ্গটিকে মিলাতে হবে? যৌনমিলনের পর কীভাবে নিজকে পাকপবিত্র করতে হয়, সে সম্পর্কে একটি হাদিসঃ সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৮৪:আবু মুসা হতে বর্ণিতঃ এক দল মুহাজির এবং এক দল আনসারের মধ্যে একবার মতবিরোধ দেখা দেয়। (মতবিরোধের কারণ ছিল এই যে) জনৈক আনসার বলেছিল- গোসল ফরজ হবে কেবলমাত্র তখনই যদি (যৌন সঙ্গমের ফলে) বীর্য বেরিয়ে আসে। কিন্তু মুহজিরগণ বলেন যে মেয়েলোকের সাথে সঙ্গমে মিলিত হলেই গোসল ফরজ হয়ে যায় (বীর্যপাত ঘটুক আর নাই ঘটুক, তাতে কিছু এসে যায় না)। আবু মুসা বললেন- ঠিক আছে, আমি তোমাদেরকে এ বিষয়ে সঠিক নিয়ম বাৎলে দেব। তিনি (আবু মুসা) বলেনঃ আমি সেখান থেকে উঠে আয়েশার নিকট গেলাম এবং তার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থণা করলাম। অনুমতি মিলল এবং আমি তাকে প্রশ্ন করলামঃ উম্মুল মোমেনীন, আমি আপনাকে এমন একটি বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই যা বলতে আমারই লজ্জা লাগছে।
তিনি বললেন- যে কথা তুমি তোমার জন্মদাত্রী মাকে জিজ্ঞেস করতে লজ্জা পেতে না, আমাকেও তুমি তা জিজ্ঞেস করতে পার। আমি তোমার মায়ের মতোই। এ কথার পর আমি তাকে বললাম- একজন পুরুষের উপর গোসল ফরজ হয় কখন? উত্তরে তিনি বললেন- তুমি ঠিক জায়গায়ই এসেছ। রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন- কোন ব্যক্তি যদি (স্ত্রীলোকের) চারটি প্রত্যঙ্গের উপর সওয়ার হয় এবং খৎনা করা অঙ্গগুলি পরস্পর স্পর্শ করে, তখনই গোসল করা ফরজ হয়ে দাড়ায়। পুরুষটির চরম তৃপ্তি হলো কিন্তু সঙ্গিনীর হলো না (কিংবা বিপরীত ঘটলো-- মেয়েটির অর্গাজম হলো, পুরুষটির হলো না)। অসমাপ্ত যৌনতৃপ্তির ক্ষেত্রে ইসলামী সমাধান কী, নীচের হাদিস দু’টি হতে তার উত্তর পাওয়া যেতে পারে। পাঠক, হাদিস দু’টি পাঠ করুন এবং আপনার বেডরুমেও কোনদিন এরূপ সমস্যার মুখোমুখী হয়ে থাকলে তার সাথে মিলিয়ে নিন। সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৭৭: উবেই ইবনে ক্কাব হতে বর্ণিতঃ আমি একজন লোক সম্পর্কে রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে জিজ্ঞেস করি। লোকটি স্ত্রীর চরম তৃপ্তির আগেই উঠে পড়তো। এ কথা শুনে তিনি (নবী) বললেন- তার উচিৎ স্ত্রীর (যৌনাঙ্গ হতে নিঃসৃত) ক্ষরণ ধুয়ে ফেলা, অতঃপর অজু করে নেয়া ও নামাজ পড়া। সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৮০: জায়িদ বিন খালিদ বলেছেন যে তিনি উসমান ইবনে আফফানকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ একজন লোক স্ত্রীর সাথে সঙ্গমে মিলিত হলো, কিন্তু স্ত্রী চরম তৃপ্তি পর্য্যন্ত পৌছুতে পারল না। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
উসমান বললেন- নামাজের জন্যে সে যেভাবে অজু করে এক্ষেত্রেও তার তাই করা উচিৎ, এবং নিজের যৌনাঙ্গটিও ধুয়ে ফেলা উচিৎ। উসমান আরও বলেন- আমি এ কথা রসুলুল্লাহর (দঃ) মুখ থেকে শুনেছি।
Post a Comment