ইসলামে কাম ও কামকলা ৩২

জাওজ হচ্ছে পত্নী, আজওয়াজ পত্নীগণ। বাংলা তরজমাকারীরা কেন পবিত্র গ্রন্থের তরজমায় এরূপ করেছেন তা তারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে ইংরেজী অনুবাদকারীরা তা করেননি, ষ্পষ্টভাবে ওয়াইভস (wives) বলে অনুবাদ করেছেন। পাঠকরা যাতে বাজারে প্রচলিত বাংলা অনুবাদ গ্রন্থগুলি পড়ে কোনপ্রকার ধন্দে না পড়েন, তাই এত কথা বলা। সে যাহোক, বর্তমান জমানায় যুদ্ধবন্দী কারা? এই প্রশ্নের জবাব খুজতে বেশীদুর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যেহেতু কাফেরদের সাথে চিরস্থায়ী যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে বলে ইসলাম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সুতরাং কাফেরদের দেশের সমস্ত রমনীই অন্ততঃ তাত্ত্বিকভাবে এই ক্যাটাগরিতে পড়ে। এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে কাফেরদের দেশে বসবাসরত একজন মুসলমান (তা সে বিবাহিত বা অবিবাহিত যাই হোক না কেন) যে কোনসংখ্যক কাফের রমনীর সাথে ঘুমাতে পারে (অর্থাৎ সেক্স করতে রে)। এই কাজের জন্যে জিনা বা ব্যভিচারের দায়ে লজ্জিত বা দন্ডিত হওয়ার বিন্দুমাত্রও শঙ্কার কারণ নাই তার। অনেক ইসলামপন্থী হয়তো গর্ব করে বলেই বসবেন যে এইসব কাফের নারীরা মুসলমান পুরুষের স্বাদ গ্রহন করতে পারছে - এটা তাদের চৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য। একবার থাইল্যান্ডের এক মেসাজ পার্লারে কয়েকজন পাক্কা মুসলমানের সাথে দেখা হয় আমার। থাই যৌনকর্মীদের সাথে তারা কী করছে- আমার এই প্রশ্নের জবাবে তারা অম্লানবদনে বলল যে থাই রমনীদের সাথে সেক্স করা দোষের কিছু না। কারণ থাইল্যান্ড কাফেরদের দেশ আর কাফের রমনীদের সাথে সেক্স করা পুরোপুরি ইসলাম সম্মত। বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে মুসলমানরা কাফেরদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে, বিশ্বের সমস্ত অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধাবস্থায় আছে মুসলমানরা। যুদ্ধাবস্থায় সমস্ত কাফের রমনীরাই গনীমতের মাল হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য, তা সে যেখানেই থাকুক না কেন। তারা আমাকে আরও বলে যে কোন মুসলমান যদি অমুসলিম দেশে ভ্রমন করতে যায়, অমুসলিম রমনী ভোগ করায় কোন দোষ নেই, একাজ পুরোপুরি শরীয়তসম্মত। তাদের কথাকে তখন মোটেও আমলে নেইনি আমি। ভেবেছিলাম এইসব মোল্লারা ইসলামের কিছুই জানে না, নিজেদের ভোগবাসনা চরিতার্থ করতে যা তা বানিয়ে বলছে। এর কয়েক বছর পর আমি ইসলাম সম্পর্কে ষ্টাডি করতে মনস্থ করি। গভীরভাবে অধ্যয়নের পর বিস্ময়ে যেন বোবা হয়ে গেলাম আমি। বুঝতে পারলাম, থাইল্যান্ডে যাদেরকে আমি কাঠমোল্লা ভেবে মনে মনে গাল দিয়েছিলাম, তারা ঠিক কথাটিই বলেছিল সেদিন। জীবন্ত ইসলাম হিসেবে মুসলমানরা যা মান্য করে থাকে, সেই শারিয়ার বাইরে কিছুই করেনি তারা! বিশ্বাস হচ্ছেনা তো? তা’হলে শারিয়া বর্ণিত নীচের আইনটি পড়ে দেখুন।

বিদেশের মাটিতে জিনা বা ব্যভিচার করলে কোন শাস্তি নাই (রেফারেন্স-১১, পৃ-১৮৫)

বিদেশের মাটিতে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটন (Committing whoredom) শাস্তিযোগ্য নয়-
যদি কোন মুসলমান বিদেশের মাটিতে কিংবা বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের কারণে দোষী সাব্যাস্ত হয়, এবং অতঃপর মুসলিম রাষ্ট্রে প্রত্যাবর্তন করে, তার উপর শাস্তি
প্রয়োগযোগ্য হবে না, এই কারণে যে একজন ব্যক্তি, সে যেখানেই থাকুক না কেন, মুসলিম ধর্ম বিশ্বাস গ্রহন করার কারণে, সেখানকার (অর্থাৎ মুসলিম রাষ্ট্রের) সমস্ত বাধ্যবাধকতা পালন করে চলতে নিজেকে দায়বদ্ধ করেছে। এর পক্ষে আমাদের পন্ডিতজনদের (Doctors) দ্বিবিধ যুক্তি রয়েছে:-
প্রথমতঃ- নবী বলেছেন যে- “বিদেশের মাটিতে শাস্তি প্রদান করা যায় না”;
এবং দ্বিতীয়তঃ- শাস্তি প্রদানের বিধানগুলির অভিপ্রায় হচ্ছে (অপরাধ) রোধ করা কিংবা সতর্ক করা;
এক্ষেত্রে বিদেশের মাটিতে একজন মুসলমান ম্যাজিষ্ট্রেটের কোন কর্তৃত্ব নাই, সুতরাং বিদেশের মাটিতে বেশ্যবৃত্তি সংঘটনের দায়ে যদি কোন ব্যক্তির উপর শাস্তির বিধান প্রয়োগ করা হয়, তা’হলে উক্ত বিধান অর্থহীন, কারণ বিধানের উদ্দেশ্যই হচ্ছে যেন শাস্তি কার্য্যকরী হতে পারে; এবং যেহেতু বিদেশের মাটিতে ম্যাজিষ্ট্রেটের কর্তৃত্ব নাই, শাস্তি কার্যকর করা অসম্ভব; যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে বিদেশের মাটিতে বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের দায়ে সেখানে শাস্তি প্রয়োগযোগ্য নয়; এবং উক্ত ব্যক্তি যদি পরবর্তীতে বিদেশের মাটি হতে মুসলমান রাষ্ট্রে আগমন করে, তার উপর শাস্তি প্রয়োগ করা যাবে না; কারণ বেশ্যাবৃত্তি সংঘটনের সময় যেহেতু শাস্তি প্রদান করা হয় নাই, পরবর্তীতে তা প্রদান করা যাবে না।

অসমাপ্ত

1/Post a Comment/Comments

  1. এত কিছু তো জানা ছিল না? আপনার ব্লগ পড়ে যা বুঝলাম তাতে তো মাথা ঘুরে যাবার মতো অবস্থা।

    banglablogtips.blogspot.com

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post