চার অশ্বারোহী ৪

স্যাম হ্যারিস: আমার মনে হয় সেই প্রশ্নের একটা উত্তর আছে। ভিন্ন একটি বিষয়ে আমাদের অজ্ঞতা দূর করবে। অথবা অন্তত: আমার ভিন্ন মতাদর্শকে খানিকটা আলোকিত করে তুলবে। এ বিষয়ে… আমার ধারণা, আমি আমার ধনুকের তেমন ক্ষতি না করেই বলতে পারি, আমি এখনও ‘আধ্যাত্মিক’, ‘অতিন্দ্রীয়’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে যাচ্ছি। অবিশ্বাসীদের আতঙ্ক যে আমি বুঝতে পারি, তা অবশ্য আমি স্বীকার করি। আমি জানি বিভিন্ন ধরণের দুর্লভ অভিজ্ঞতা আপনাদের হয়েছে। অবশ্য এ কথা শুধুমাত্র বিবেকের কোন তাড়না ছাড়া ধর্মবিষয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে বলছি। এবং শুধুমাত্র ধর্মবিষয়ে আলোচনার কথা এজন্য বলছি যে আসলে এসব কুসংস্কারে পূর্ণ প্রহেলিকা ছাড়া কিছুই নয়। অথচ এই ধর্ম কোন কারণ ছাড়াই আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক আলোচনাকে পণ্ড করে। কিন্তু এটা পরিস্কার যে জনগণের কিছু অসাধারণ অভিজ্ঞতা আছে। ধর্মকে তাদের গ্রহণ করার একাধিক কারণ থাকতে পারে। হয়তো তারা এতে নেশাগ্রস্ত অথবা বছরে পর বছর তারা জীবনগুহায় নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছে। অথবা কিছু স্নায়ুবিক প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে তারা ধর্মের মধ্যে ডুবে আছে। কিন্তু যাই বল না কেন ধর্ম বিষয়ে প্রত্যেকের নিজস্ব যৌক্তিক অভিজ্ঞতা থাকে। আর মানুষ নিজেকে পরিস্কার দেখতে পছন্দ করে। জীবনে সেই সব দিনগুলোই তার কাছে শ্রেষ্ঠতম যে দিনগুলোতে সে নিজেকে স্পষ্ট দেখতে পেরেছে। নিজেকে আবিষ্কার করতে পেরেছে। তোমরা জান, তারা প্রকৃতির মুখাপেক্ষী থাকে। মানুষ তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে তাকে মর্যাদা দেয়। তাকে আজ আমরা উপহাস বা খেলার পাত্রে রূপান্তরিত করেছি। এটাই সেই কারণ, আমি কেন একে ব্যঙ্গ করে নিজেকে নোংরা করবো? এসব বলার কারণ হল, অন্ততঃ জনগণের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে মানুষের জীবনের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ আবেগ নিয়ে তোমরা উপহাস করছো আবার তাকে ভাগাড়ে নিক্ষেপ করছো।

রিচার্ড ডকিন্স: দেখুন স্যাম, আমি আপনার সাথে একমত হতে পারছি না। আপনি যে কথাগুলো বললেন তা খুব ভাল কথা, কারণ আপনার কথা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, অতিন্দ্রীয় রূপ লাভ করার ক্ষেত্রে ধর্ম একমাত্র বিষয় নয়। এটা একটা ভাল প্রস্তাব। কারণ কারও নাস্তিক হওয়াটাও একটা রাজনৈতিক অধিকার। অবিশ্বাসী না হয়েও উপায় নেই। কারণ নীতিবোধের বিভিন্নতা কোন সাহায্য করতে পারে না। এজন্য সবখানে বিভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রণ থাকাটা অপেক্ষাকৃত ভাল। কিন্তু তোমার সাথে আমার একটু মতভেদ আছে। আমি বিতর্ক না করলেও এর মূল্য কমে যাবে না।

স্যাম হ্যারিস: ঠিক।

ক্রিস্টোফার হিচেনস: তুমি জিনোম এর অগ্রদূত ফ্রান্সিস কলিন্স এর সেই বিখ্যাত উক্তিটি নিশ্চয় শুনেছো। তিনি বলেছেন- একদিন পাহাড়ে চড়তে গিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে তিনি এতটাই বিমুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন যে, তারপর তিনি পাহাড় থেকে হামাগুড়ি দিযে নেমে এলেন এবং যিশুর কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। একটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক পরিসমাপ্তি।
(সবাই তার সাথে একমত হলেন)
অসমাপ্ত

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post